
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে দেশের ব্যাংক খাতে অবসায়িত ঋণের পরিমাণ Tk74,570 কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে Tk4.20 লক্ষ কোটি টাকায়, যা মোট ঋণের ২৪.১৩%।
এই ঋণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো নতুন ঋণ শ্রেণিবিন্যাসের কঠোরতা এবং কিছু বড় ঋণগ্রহীতার ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে অনেক ঋণ ‘খারাপ ঋণ’ (bad loan) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে—যার মধ্যে ৮১.৩৮% বা Tk3.42 লক্ষ কোটি টাকা আদায় অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পূর্ববর্তী সরকার আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অনেক ডিফল্ট ঋণ ‘নিয়মিত’ হিসেবে দেখানো হয়েছিল। সরকার পরিবর্তনের পর প্রকৃত চিত্র প্রকাশ পাচ্ছে।
২০২৪ সালের জুনে অবসায়িত ঋণের পরিমাণ ছিল Tk2.11 লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ মাত্র ৯ মাসে ঋণ শ্রেণিকরণ অনুযায়ী Tk2.09 লক্ষ কোটি টাকা বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞ মতামত:
- মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, “বড় ঋণগুলো দীর্ঘদিন ধরে অবসায়িত ছিল, এখন কেবলমাত্র তা প্রকাশ পাচ্ছে।”
- সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, “Provision বাড়লে ব্যাংকের তারল্য সংকট তৈরি হয়, যা ঋণ বিতরণে বাধা দেয়।”
- ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ বলেন, “এনপিএল পুনরুদ্ধারের জন্য একটি পৃথক ডেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গঠন করা উচিত।”
ব্যাংকভিত্তিক এনপিএল চিত্র:
- রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক: Tk1.46 লক্ষ কোটি (ঋণের ৪৫.৭৯%), যার মধ্যে ৯০% ‘খারাপ’ ঋণ। Provision ঘাটতি Tk64,000 কোটি।
- বেসরকারি ব্যাংক: Tk2.64 লক্ষ কোটি (ঋণের ২০.১৬%), যার মধ্যে ৭৭% খারাপ ঋণ। Provision ঘাটতি Tk1.07 লক্ষ কোটি।
- বিদেশি ব্যাংক: Tk3,238 কোটি (৪.৮৩%)
- বিশেষায়িত ব্যাংক: Tk6,494 কোটি (১৪.৪৭%)
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেবল নিয়মিত নিয়ন্ত্রণ নয়, দীর্ঘমেয়াদি পুনরুদ্ধার কাঠামো, আইনি সংস্কার এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া এই সংকট সমাধান সম্ভব নয়।