
সাত বছরে বাংলাদেশ বিদেশ থেকে যে টাকা ঋণ নিয়েছে, তার পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে। ২০১৬-১৭ সালে দেশের বিদেশি ঋণ ছিল ৫১ বিলিয়ন ডলার, আর ২০২৪ সালের শেষে তা দাঁড়িয়েছে ১০৩ বিলিয়ন ডলারে।
এই সময়ে দেশের মোট উৎপাদন (GDP) ২২৩ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৫০ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, দেশের অর্থনীতি অনেক বড় হয়েছে।
এই কারণে, দেশের মোট ঋণ বাড়লেও, একে সামাল দেওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। কারণ, GDP-এর তুলনায় ঋণের পরিমাণ খুব বেশি বাড়েনি — আগেও ছিল ২২.৯%, এখন ২২.৮%।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঋণ বেশি করে নেওয়া হয়েছে অবকাঠামো (যেমন: রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ কেন্দ্র) বানানোর জন্য। এতে দেশের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে সহায়তা হতে পারে। তবে তারা সতর্ক করেছেন, এখন বৈশ্বিক সুদের হার বাড়ছে, আর ডলারের দামও বেড়েছে — ফলে ভবিষ্যতে এই ঋণ শোধ করা কঠিন হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মোট ঋণের মধ্যে সরকারি খাতে ৮৪ বিলিয়ন ডলার, আর বেসরকারি খাতে ১৯ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত, সরকারি ঋণ এক বছরে ৬.৩% বেড়েছে, আর বেসরকারি ঋণ ৫.৩%।
নীতিনির্ধারকরা বলছেন, এখন যেহেতু সুদের হার বাড়ছে এবং সহজে কম সুদের ঋণ পাওয়া যাচ্ছে না, তাই এখন থেকে বুঝেশুনে ঋণ নেওয়া উচিত।
এছাড়া, রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স থেকে যে টাকা আসে, তার ৫.৫% এখন ঋণ পরিশোধে চলে যাচ্ছে। আর এই হার বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে চাপ বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞ সেলিম রায়হান বলছেন, নতুন করে নেওয়া অনেক ঋণের এখনো চোখে পড়ার মতো ফল পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের রপ্তানি এখনো মূলত পোশাক খাতে সীমাবদ্ধ — এতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় সীমিত থাকে, যা দিয়ে ঋণ শোধ কঠিন হতে পারে।
তিনি বলেন, এখন থেকে ঋণ নেওয়ার আগে নিশ্চিত হতে হবে, তা যেন দেশের অর্থনীতিতে সঠিকভাবে কাজে লাগে এবং এর ফলাফল স্পষ্ট হয়। পাশাপাশি রপ্তানি খাতকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তোলার দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
[…] আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। […]