বাংলাদেশে কিছু ব্যাংকের অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে গিয়েছিল। সেগুলোকে আবার ভালো অবস্থায় আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক আগে থেকেই চেষ্টা করছে।
সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার যখন দায়িত্বে ছিলেন, তখন ১০টি ব্যাংককে দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এতে অনেক গ্রাহক চিন্তিত হয়ে পড়ে।
তারপর নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, এই ব্যাংকগুলো শুধু দুর্বলই না, অনেকটা দেউলিয়া (দেউলিয়া মানে একদম ভেঙে পড়া) হয়ে গেছে। এই কথা শুনে মানুষ আরও ভয় পায়।
কিছু মানুষ মনে করছেন, গভর্নর এমন কথা অনুমানের উপর বলেননি। বরং তার কাছে হয়তো কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ম করে দিয়েছে, যদি কোনো ব্যাংক বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা ফেরত পাবেন, এমনকি যদি তিনি ১০ লাখ টাকা রাখেন তাহলেও।
এই কারণে মানুষ এখন চিন্তায় পড়ে গেছে—তাদের টাকা কি নিরাপদ থাকবে?
সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংক মিলে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ভালো করার জন্য নতুন আইন বানিয়েছে। এখন দরকার হলে, কোনো দুর্বল ব্যাংককে সরকার সাময়িকভাবে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, এসব ব্যাংককে পুরোপুরি ভালো হতে ৫ থেকে ১০ বছর লাগতে পারে। তবে তারা প্রতিদিন চেষ্টা করছে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কথা বলে, আর্থিক সাহায্য দিয়ে।
এখন পর্যন্ত ৬টি ব্যাংক একটু একটু করে ভালো হয়েছে। এরা হলো—ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক ও আল-আরাফাহ ব্যাংক।
এই ব্যাংকগুলো এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকার ওপর আর বেশি নির্ভর করছে না।
তবে এখনো ৫টি ব্যাংক খুবই খারাপ অবস্থায় আছে। তারা প্রতিদিন টাকা চাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে, কারণ তাদের গ্রাহকরা টাকা তুলে নিচ্ছে।
গত বছর এই ৫টি ব্যাংককে ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়, কিন্তু এখনো ৭ হাজার কোটি টাকা ফেরত আসেনি। তাই নতুন করে আর কোনো ব্যাংক তাদের ঋণ দিতে চায় না।
আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএমএফ (IMF) বলছে, এইভাবে টাকার সাহায্য বন্ধ করতে হবে, না হলে পুরো ব্যাংক খাত বিপদে পড়বে।
সবশেষে, বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন আইন করে বলছে, তারা এখন থেকেই সমস্যা দেখা দিলে চুপিচুপি কাজ করবে।
তারা মিডিয়ার মতো কাজ করবে, মানে প্রকাশ্যে না এসে ভেতর থেকে পরিস্থিতি ঠিক করার চেষ্টা করবে।
